ভালোবাসার কষ্টের গল্প - তুই বড়ই স্বার্থপর - খবরের পাতা

ব্রেকিং

Post Top Ad

শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২

ভালোবাসার কষ্টের গল্প - তুই বড়ই স্বার্থপর

Sad Love Story Bangla


রাজু আর রিতু একজন আরেক জনকে খুবই ভালবাসত,,, কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারত না,,, যেন দুটি দেহে একটি প্রাণ,,, দুজন দুজনের অনেক কেয়ার করত,,, রিতু ছিল অনেক অভিমাণী মেয়ে,,, আর রাজু ছিল অনেক আবেগি ছেলে,,, রিতু যখন রাজুর উপর রাগ করত তখন রাজু বলত, যেদিন আমি আর পৃথিবীতে থাকব না সেদিন তুই বুঝবি আমি তোকে কতটা ভালবাসতাম,,, আমার শূণ্যতা তোকে বুঝতে শিখাবে আমি কে তোর,,,, তখন রিতু সব অভিমাণ ভুলে রাজুকে বলত, তোকে তো কখনো ছাড়বই না,,, রাজু রিতুকে বলত, আমি তোকে সত্যিকারের চাঁদ দেখাবো,,, তখন রিতু বলত আমি রাতে চাঁদ দেখি, তোর চাঁদ দেখাতে হবে না,,, রিতু প্রতিদিন কলেজে আসার সময় রাজুর জন্য নিজ হাতে রান্না করে আনত আর রাজুকে মুখে তুলে খাইয়ে দিয়ে তারপর রিতু খেত,,, রিতু একদিন অন্য ছেলের সাথে কথা বলায় রাজু অনেক কেঁদেছিল, আর বলেছিল তুই আর কখনোই কোন ছেলের সাথে কথা বলবি না,,, তখন রিতু বলেছিল যে তাহলে তুই কথা দে তুই আমায় ছেড়ে কখনোই চলে যাবি না,,,, রিতু রাজুর সাথে কথা না বলে থাকতে পারত না,,, রিতুর জন্মদিন দিনে রাজু একটা শাড়ি উপহার দেয়,,, আর বলে আমি কখনো রাগ করলে তুই এই শাড়ি পড়ে আমার সামনে আসলেই আমার রাগ ভাঙ্গবে,,, রাজুর গান না শুনলে রিতুর দিনই কাটত না,,, রাজু রিতুকে বউ বলে ডাকলে রিতু অনেক রাগারাগি করত,,, রাজু বলত আমাদের একটা মেয়ে আর একটা ছেলে হবে,,, রিতু একা একা রাস্তা পার হতে পারত না,,, তাই রাজু সবসময়ই রিতুকে রাস্তা পার করিয়ে দিত,,, রাস্তায় হাঁটার সময় রাজু সবসময়ই রিতুর হাত ধরে হাটত,,,, রাজু প্রতি রাতে রিতুকে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াইতো,,, রিতু অনেক ফুচকা খেত তাই রাজু ওকে অনেক বকা দিত,,, এভাবে বেশ ভালই চলছিল তাদের জীবণ,,,, রাজু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে,,, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়,,,কয়েকদিন পর রাজু সুস্থ হয় কিন্তু সুস্থ হয়েই সে রিতুতে ইগনোর করা শুরু করে,,, রিতুর সাথে কথা বলতে চায় না,,, রিতু ফোন দেয় , মেসেজ দেয় কিন্তু রাজু তার কোন রিপ্লে দেয় না,,, রিতুর সাথে খারাপ ব্যবহার করে,,,, রাজুর এমন পরিবর্তন রিতুকে অনেক কস্ট দেয়,,,, রিতু রাজুর কাছে অনেক কান্না করে কিন্তু রাজু কিছুই শুনে না,,,, রাজু রিতুকে বলে, তুই আমার সাথে আর কথা বলবি না,,,, আমি তোকে ভালবাসি না, এতদিন তোর সাথে আমি ভালবাসার অভিনয় করেছি,,,, তুই আর কখনোই আমার সামনে আসবি না, আমায় ফোন দিবি না,,,, রাজুর কথা শুনে রিতু কান্না করতে করতে বাসায় চলে যায়,,, আজ সাতদিন হলো তাদের কোন কথা হয়নি,,, রিতু এখন রাজুকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে,,,, রিতু ভাবলো, সে রাজুর দেওয়া সব উপহার ফিরিয়ে দিবে,,, তাই রিতু রাজুর দেওয়া সব উপহার নিয়ে বের হবে এমন সময় রিতুর বাসায় রানা (রাজুর বন্ধু) আসল,,,, রানা কান্না করতে করতে রিতুর হাতে একটা চিঠি দিয়ে চলে গেল,,,, রিতু অবাক হয়ে চিঠিটা খুলেই চিৎকার করে কেঁদে উঠল,,, সেটা ছিল রাজুর পাঠানো চিঠি,,,চিঠিতে লেখা ছিল,!!!

প্রিয় অভিমাণী,

চিঠিটা তুই যখন পড়বি তখন আমি আর পৃথিবীতে থাকব না,,, আজ হয়তো তুই আমাকে ঘৃণা করিস,,, আমি চাই তুই আমায় ঘৃণা করে ভুলে যাস,,,, সেদিন মেডিকেলে রিপোর্টে আসে আমার দুইটা কিডনিই নস্ট হয়ে গেছে,,, আমি আর দশদিন বাঁচব,,, আমি চাই তুই সুখে থাক,,, তোকে কথাটা বললে তুই অনেক কস্ট পেতি তাই বলি নি,,, তোর সাথে আমি অনেক খারাপ আচরণ করছি,,, প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিস,,, সত্যি রে পাগলি আমি তোকে অনেক ভালবাসি,,,জানিস, তোকে অনেকবার ফোন দিতে গিয়েও দেই   নি,,, গত কয়েকদিন তোকে ছাড়া আমার অনেক কস্ট হয়েছে পাগলি,,, কবরে গিয়েও তোকে অনেক মিস করব রে,,,, তোকে ছাড়া থাকতে আমার অনেক কস্ট হবে রে পাগলি,,, তুই অন্য কাউকে ভালবেসে সুখে থাকিস,,,

চিঠিটা পড়ে রিতু চিৎকার করে কেঁদে রাজুর বাসায় যায়,,, গিয়ে দেখে রাজুকে সাদা কাফনে জড়িয়ে খাটিয়ায় রাখা হয়েছে,,, রিতু চিৎকার করে কেঁদে রাজুর লাশের পাশে গিয়ে কাদে আর বলে,,, এই পাগল তুই শুয়ে আছিস কেন?? এই বাবু ওঠ, আজ কতদিন তোকে দেখিনি,,, চল আমরা ঘুরতে যাব,,, এই বাবু দেখ আমি তোর দেওয়া শাড়ি পড়ছি, বল না আমায় কেমন লাগছে??? এই বাবু, কথা বল আমার সাথে, , এই পাগল তুই জানিস না যে তোর সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারি না?? এই বাবু, উঠ, আমার হাত ধর চল আমরা এক সাথে হাটব,,, রিতু কাদতে কাদতে একটা ছেলের কাছে গিয়ে চিৎকার করে বলে, এই বাবু দেখো, আমি অন্য ছেলের সাথে কথা বলছি, তুমি আমায় বাঁধা দিবে না,,, রিতু রাস্তায় গিয়ে কাঁদে আর চিৎকার করে বলে, এই বাবু আমায় রাস্তা পার করে দিবে না??? আমায় তুমি রাস্তা পার করে দিবে না,,,, রিতু আবার লাশের পাশে গিয়ে কাদে আর বলে এই পাগল আমায় গান শুনাবি না??? এই পাগল উঠ না প্লিজ, এই পাগল, তুই না উঠলে আমায় রাতে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াবে কে??? এই পাগল, এই দেখ আমি রান্না করে আনছি, হা কর আমি তোকে খাইয়ে দেই,,, আমার খুব ক্ষুধা লাগছে, তুই না খেলে আমি কিভাবে খাব বল??? রিতু রাজুর ফোন ফোন  দিয়ে কাদে আর বলে,,এই পাগল ফোন  ধর, তোর সাথে কথা থাকতে আমার খুব কস্ট হচ্ছে,, একটু কথা বল প্লিজ,,, রিতু কান্না করে আর বলে, এই তুই আমাকে সত্যিকারের চাঁদ দেখাবি না??? রিতু রাজুর পা ধরে কাদে আর বলে, প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে,,,তুই আমায় কথা দিছিলি যে আমায় ছেড়ে কোথাও যাবি না,,, এখন  কেন এমন করছিস?? এই বাবু সবাই বলছে তুই মরে গেছিস,,, কিন্তু আমি তো জানি তুই মরিস  নি,,, তুই আমাকে ছাড়া মরতে পারিস না,,, এই পাগল ঔঠ প্লিজ,,, এই পাগল আমি তোকে ছাড়া বাচব কিভাবে বল??? সবাই যখন লাশ নিয়ে যাচ্ছিল, তখন রিতু চিৎকার করে কাদে আর ডাকে কিন্তু রাজু আর আসে না,,,, রিতু চিৎকার করে বলে, "তুই বড়ই স্বার্থপর"।


তুই বড়ই স্বার্থপর
রহস্যময়ী ছেলে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad