রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত - খবরের পাতা

ব্রেকিং

Post Top Ad

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত

 

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

হাজার বছরের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে রাজা-রানি এসেছে অনেক, তবে তাদের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের দীর্ঘতম রাজত্বকারী শাসক ছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।  তাঁর রাজত্বকাল জুড়ে ছিল কঠোর কর্তব্যপরায়ণতা । ৭০ বছর আগে এলিজাবেথের সিংহাসনে আরোহনের ক্ষেত্রে তার নিজের কৃতিত্ব বলে কিছু ছিল না। বংশানুক্রমেই তার স্থান পাকা হয়েছিল। রাজদণ্ড হাতে নেওয়ার পর তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।


রানি এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি উইন্ডসর ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল ২টা বেজে ৪০ মিনিটে (জিএমটি) লন্ডনের ১৭ ব্রুটন সেন্টে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা অ্যালবার্ট, ডিউক অফ ইয়র্ক এবং মা সাবেক লেডি এলিজাবেথ বোওজ -লিওন-এর তিনি ছিলেন প্রথম সন্তান। এলিজাবেথের একমাত্র বোন প্রিন্সেস মার্গারেট ১৯৩০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবা অ্যালবার্ট ছিলেন পঞ্চম জর্জের দ্বিতীয় সন্তান। মা, ডাচেস অভ ইয়র্ক (পরবর্তীকালে রাণী এলিজাবেথ, রাণীমাতা) ছিলেন স্কটিশ অভিজাতদের আর্ল অফ স্ট্রথমোর এবং কিংহর্নের কনিষ্ঠ কন্যা।

রানি এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
ছবিঃ ইন্টারনেট

২৯ মে বাকিংহাম প্যালেসের ব্যক্তিগত চ্যাপেলে তার নামকরণ করা হয়।। তার মাতার নামানুসারে তাকে এলিজাবেথ নামকরণ করা হয়েছিল; ছয় মাস আগে মারা যাওয়া পঞ্চম জর্জের মায়ের নামানুসারে আলেকজান্ড্রা এবং ম্যারি তার পিতামহীর নামানুসারে রাখা হয়। তার নিকটতম পরিবারের লোকেরা তাকে "লিলিবেট" ডাকত বলে জানা যায়।

চাচা অষ্টম এডওয়ার্ড ১৯৩৬ সালের ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করলে এলিজাবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জ ব্রিটিশ সিংহাসনে বসে। ওই সময় এলিজাবেথের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সেসময় তার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।  এলিজাবেথের বাবা ডিউক অফ ইয়র্ক অনিচ্ছার সঙ্গে সিংহাসনে বসেন রাজা ষষ্ঠ জর্জ হিসাবে এবং তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠান কিশোরী এলিজাবেথকে দারুণভাবে মুগ্ধ করে। পরে প্রিন্সেস এলিজাবেথ লিখেছিলেন ওই অনুষ্ঠান ছিল অসাধারণ সুন্দর।


মায়ের সঙ্গে দ্বিতীয় এলিজাবেথ
মায়ের সঙ্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

সেসময় ১৯৩৯ সালে, ১৩ বছরের কিশোরী প্রিন্সেস এলিজাবেথ তার বাবা ও মা , রাজা ও রানির সঙ্গে গিয়েছিলেন ডার্টমাউথে রয়াল নেভাল কলেজে। সেখানে এলিজাবেথ ও তাঁর বোন মার্গারেটের সঙ্গে প্রথম সাক্ষা ঘটে গ্রিসের যুবরাজ প্রিন্স ফিলিপের, যিনি ছিলেন তাঁদের দূর সম্পর্কের কাজিন। সেটাই যে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ ছিল তা নয়, তবে সেই প্রথম এলিজাবেথ, ফিলিপ সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এলিজাবেথের বয়স যখন ১৮, তখন ১৯৪৪ সালে ফিলিপের প্রতি তাঁর প্রণয় গভীর হয়ে ওঠে। তিনি ঘরে ফিলিপের ছবি রাখতেন, দুজন দুজনকে চিঠি লিখতেন। ১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর গ্রীক যুবরাজ এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ফিলিপ মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার গির্জায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

১৯৪৭ সালে আত্মীয় ফিলিপের সঙ্গে বিয়ে হয় দ্বিতীয় এলিজাবেথের
১৯৪৭ সালে ফিলিপের সঙ্গে বিয়ে হয় দ্বিতীয় এলিজাবেথের | ছবিঃ ইন্টারনেট
 

বিয়ের পর ফিলিপ নৌবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে মল্টায় যান এবং বিয়ের প্রথম কয়েক বছর তাঁরা স্বাভাবিক বিবাহিত জীবন কাটান। এ সময়ই তাঁদের প্রথম পুত্র চার্লসের জন্ম হয় ১৯৪৮ সালে এবং ১৯৫০ সালে জন্ম হয় কন্যা অ্যানের। এই দম্পতির চার সন্তান ছিল- প্রিন্স চার্লস (জন্ম ১৯৪৮), প্রিন্সেস অ্যান (১৯৫০), প্রিন্স অ্যান্ড্রু (১৯৬০) এবং প্রিন্স এডওয়ার্ড। (১৯৬৪)। ২০২১ সালের এপ্রিলে রানির স্বামী ফিলিপ ৯৯ বছর বয়সে মারা যান।

এলিজাবেথ-ফিলিপ এর প্রথম সন্তান (প্রিন্স) চার্লস
এলিজাবেথ-ফিলিপ এর প্রথম সন্তান (প্রিন্স) চার্লস | ছবিঃ ইন্টারনেট

১৯৫২ সালে যখন এলিজাবেথের বয়স ২৫, তখন রাজা ষষ্ঠ জর্জ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শয্যা নেন। এলিজাবেথ তাঁর স্বামীকে নিয়ে সেবছর বিদেশ সফরে যান বাবার হয়ে দায়িত্ব পালন করতে। এলিজাবেথের বয়স তখন ২৫। চিকিৎসকের পরামর্শ উপেক্ষা করে রাজা তাঁকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন। সেটাই ছিল পিতা ও কন্যার শেষ সাক্ষাত। ১৯৫২ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড সফরে বেরিয়েছিলেন রানি এলিজাবেথ। সঙ্গে প্রিন্স ফিলিপ। পথে কেনিয়া নেমেছিলেন। সেখানেই রাজার মৃত্যুর খবর পান। সেখান থেকে তিনি দেশে ফেরেন ব্রিটেনের রানি হিসেবে।

রানি এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

১৯৫২ সালে বাবার মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।  ১৯৫৩ সালের ২ জুন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে তার মাথায় রাজমুকুট পরানো হয়। এটি ছিল টেলিভিশনে প্রচারিত প্রথম রাজ্যাভিষেক।

১৯৫৩ সালের জুনে দ্বিতীয় এলিজাবেথ রানি হিসেবে সিংহাসন আরোহণ করেন।
দ্বিতীয় এলিজাবেথ রানি হিসেবে সিংহাসন আরোহণ করেন | ছবিঃ ইন্টারনেট

তিনি যখন ব্রিটেনের দায়িত্ব নেন ‘ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত যায় না’ প্রবাদ তখন প্রায় ডুবে গেছে।  যুদ্ধপরবর্তী কঠিন সময়। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, ‘এই দায়িত্ব একা পালনের শক্তি হয়তো আমার নেই।’ সবার সহায়তা চান তিনি। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলশ্রুতিতে ব্রিটিশ উপনিবেশ তখন গুটিয়ে এসেছে। নতুন রানির দায়িত্ব নিয়ে তিনি যখন ১৯৫৩ সালে কমনওয়েলথ দেশগুলোতে দীর্ঘ সফরে বেরলেন, তখন ভারতীয় উপমহাদেশ সহ অনেক দেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়েছে। ক্রমশ রাজতন্ত্রের প্রতি সাধারণ মানুষের অবিচ্ছিন্ন আনুগত্যে বদল আসতে শুরু করে। সমাজের মধ্যে নানা ধ্যানধারনাও দ্রুত বদলাতে থাকে।


রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

রানি ১৯৯২ সালকে ব্যাখ্যা করেন দুর্যোগের বছর হিসেবে।

এর মধ্যে তাঁর পরিবারে নানা ধরনের কেলেংকারি ও দুর্যোগের ঘটনা শুরু হয়। রানির দ্বিতীয় ছেলে ডিউক অফ ইয়র্ক ও স্ত্রী সারা আলাদা হয়ে যান। মেয়ে প্রিন্সেস অ্যান ও স্বামী মার্ক ফিলিপস্-এর বিয়ে ভেঙে যায়। প্রিন্স ও প্রিন্সেস অফ ওয়েলস্, অর্থাৎ চালর্স ও ডায়ানা বিয়েতে যে গভীরভাবে অসুখী এ খবর জানাজানি হয় । তারাও আলাদা হয়ে যান।

রানির প্রিয় বাসভবন উইন্ডসর কাসেলে ওই বছরই বিরাট অগ্নিকাণ্ড হয়। ওই ভবন মেরামতের খরচ সাধারণ মানুষ জোগাবে নাকি তা রানির তহবিল থেকে ব্যয় করা উচিত তা নিয়ে চলে তুমুল বিতর্ক।


রানি এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

একদিকে ইউরোপের সঙ্গে নতুন জোট গঠনের মধ্যে দিয়ে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ব্রিটেনের যোগাযোগ কিছুটা শিথিল হয়ে আসা, অন্যদিকে ব্রিটেনে রাজতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়ে জনমনে অব্যাহত বিতর্ক। ১৯৯৭ সালের অগাস্টে প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় ডায়ানা মারা যাবার পর রানির বিরুদ্ধে ওঠে সমালোচনার ঝড়। যখন প্রাসাদের বাইরে বিশাল মানুষের ঢল- ফুলের শ্রদ্ধার্ঘ্যে ভরে উঠেছে প্রাসাদের ফটকের বাইরের রাস্তাঘাট, তখন সেই শোকের মুহূর্তের সঙ্গে রানির আপাতদৃষ্টিতে একাত্ম হতে না পারায় মানুষ সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। মানুষের উত্তাল সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত রানিকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে হয়- যে ভাষণে তিনি পুত্রবধূ ডায়ানার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং সময়ের সাথে রাজ-পরিবারকে বদলানোর অঙ্গীকার দেন।


প্রিন্সেস ডায়ানা'র সঙ্গে রানি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট
প্রিন্সেস ডায়ানা'র সঙ্গে রানি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

রাজপরিবারের প্রতি ব্রিটেনের মানুষের আগ্রহ, উদ্দীপনা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ২০০২ সালে মহাসমারোহে উদযাপিত হয় রানির সিংহাসন আরোহণের সুবর্ণ জয়ন্তী, এরপর রানির ৮০ বছরের জন্মদিনে উইন্ডসরের রাস্তায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর বিশেষ সাক্ষাত-সফর, রানি ও প্রিন্স ফিলিপের বিয়ের ৬০তম বার্ষিকী উৎসব, এবং ২০১১ সালে রানির নাতি উইলিয়াম ও ক্যাথরিনের বিয়ে ও ২০১২সালে রানির সিংহাসন আরোহণের হীরক জয়ন্তী উদযাপন করা হয়।


পরিবারে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে রানি এলিজাবেথ
পরিবারে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে রানি এলিজাবেথ


২০১৬ সালে রানি তাঁর ৯০ বছরের জন্মদিন পালন করেন। নব্বই বছর পার করেও তিনি তাঁর রাজ দায়িত্ব চালিয়ে গেছেন।


২০১৬ সালে রানির ৯০তম জন্মদিন উদযাপনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে
২০১৬ সালে রানির ৯০তম জন্মদিন উদযাপন | ছবিঃ ইন্টারনেট

২০১৭ সালে তাঁর স্বামী ডিউক অফ এডিনবারা, প্রিন্স ফিলিপ অবসর নেবার পরেই তিনি একাই তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। রানির দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গী প্রিন্স ফিলিপ প্রয়াত হন ২০২১-এর এপ্রিল মাসে। ২০২২-এর জুন মাসে মহা সমারোহে উদযাপিত হয়েছে রানির সিংহাসন আরোহণের ৭০তম বার্ষিকী। 


রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং প্রিন্স ফিলিপ
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং প্রিন্স ফিলিপ | ছবিঃ ইন্টারনেট

দীর্ঘ এই শাসনকালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৫ জন প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, অ্যান্টিগুয়া, বারমুডা, বাহামা, বেলিজ, গ্রেনাডা, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্টসহ ১৫টি রাজ্যের রানি ছিলেন।


রানি এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

কালের প্রবাহে কেটে গেছে সাত দশকেরও বেশি সময়। টেমসের পানি গড়িয়েছে বহু দূর। ব্রিটেনের নিয়মতান্ত্রিক প্রধান হিসেবে তার কার্যকালে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন ১৫ জন। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে বসেছেন ১৪ জন। তিনি দেখেছেন মানুষের চাঁদে পা রাখা, বার্লিন প্রাচীরের ভাঙন কিংবা কোভিডের মতো মহামারি।


রানি এলিজাবেথের বর্ণাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত
রানি এলিজাবেথ | ছবিঃ ইন্টারনেট

৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার বর্ণাঢ্য ৯৬ বছরের জীবনের অবসান ঘটিয়ে পারি জমান পরপারে।


সুত্রঃ ইন্টারনেট

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad