পায়জামা - মজার গল্প - খবরের পাতা

ব্রেকিং

Post Top Ad

শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২

পায়জামা - মজার গল্প

Bangla Funny Story - Mojar Golpo

বিয়ে করার খুশিতে লুঙি ডান্স দিতে দিতে লুঙি খুলে গেলো মাহবুবের। ভাগ্যিস লুঙির নিচে কিছু একটা পরা ছিলো, নয়তো পঁচিশ বছরের এবাদতি পানিতে ভেসে যেতো।

দুইমাস ধরে তার জন্য মেয়ে দেখছে তার বাবা মা। আর সে বার বার তাদের না বলে বিয়ে ভেঙে দিচ্ছে। এর একটাই কারন তার গার্লফ্রেন্ড তানজু। সে কিছুতেই তানজুকে ছাড়া বিয়ে করবেনা আবার তানজুর কথা ঘরেও বলতে পারবেনা। একদিন তার বাবা তানজুর ছবি এনে দিয়ে বললেন। এই মেয়ের সাথে আমি তোমার বিয়ে ঠিক করছি তোমার একেই বিয়ে করতে হবে। নিজের গার্লফ্রেন্ডের সাথে জোর করে বিয়ে হচ্ছে। সেই খুশিতে কি লুঙি ডান্স না দিয়ে থাকা যায়? যাইহোক বিয়ের দিন বেশি দেরি করা যাবেনা বিকাল ৪টার আগে তার বউ তার ঘরে চাই। তারাতাড়ি বর সেজে  তৈরি হয়ে গেলো সে।

 মাহবুব রুম থেকে বের হতেই তার ভাবি এক চিৎকার দিয়ে উঠলো।

_আহহহহহহহহ।

_কি হইছে চিক্কুর দাও কেন? আজ আমি বউ আনতে যামু। আমার হার্ট অ্যাটাক হলে আমার বউয়ের বিয়ে ভেঙে যাবে সেটা মাথায় নাই?

_আরে সবতো বুঝলাম কিন্তু তোমার পায়জামা কই?

মাহবুব নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলো বউ আনার খুশিতে সে পায়জামা পরতে ভুলে গেছে। এক দৌড়ে উস্টা বুস্টা খেয়ে রুমে গিয়ে ডুকলো।

পায়জামা পরে বের হয়েই এক দৌড় মারলো গাড়ির দিকে। পায়জামার পিছনে যে সময়টা নষ্ট হইছে তা সে সবাইকে সালাম করে নষ্ট করতে চায়না। মাহবুবের দৌড় দেখে তার বাবা দৌড় মারলেন। তার বাবার আচমকা দৌড় দেখে তার মাও দৌড় মারলেন। মাহবুব গাড়ি উঠতে যাবে পিছন চেয়ে দেখলো তার বাবা মা আসছে। তার মানে তারা সালাম করিয়েই ছাড়বে। একজন একজন করে চৌদ্দগুস্টি সালাম করা লাগবে এতে তার সময় লস। 

মাহবুব গাড়িতে না উঠে দিলো এক দৌড়। মাহবুবের বাবা চিৎকার করে বলতে লাগলেন।

ওরে কে কোথায় আছিস জলদি আয় মাহবুব পালিয়ে যাচ্ছে।

শুরু হলো দৌড় প্রতিযোগিতা। মাহবুব আগে আগে দৌড়াচ্ছে আর তার চৌদ্দগুষ্টি তার পিছে পিছে দৌড়াচ্ছে।

২ঘন্টা যাবত দৌড়াতে দৌড়াতে সবাই কনের বাড়িতে ডুকে পরলো। মাহবুবের শালিরা ফিতা দিয়ে গেট ধরছে সেই গেট ক্রস করেই ডুকলো মাহবুব তারপর একে একে সবাই ডুকলো।

স্টেজে বসার পরে কনের বান্ধবি বার বার মাহবুবকে দেখে চোখ দিয়ে কি জানি ইশারা দিচ্ছে। মেয়েরা মিটিমিটি হাসছে। 

আহহহহহহ আজ মাহবুবের ইচ্ছে করছে বুক ফুলিয়ে বলতে। দেখো তানজু তুমি বলতে আমার মতো ছেলেকে কোনো মেয়ে বিয়ে করবেনা। আজ দেখো তোমার বরকে দেখে সব মেয়েরা পাগল হয়ে গেছে। 

একটা মেয়ে বার বার গা ঘেঁষার চেষ্টা করছে। ইশ এখন যদি একটা আয়না হতো নিজেকে নিজে দেখে একটু ক্রাশ খাওয়া যেতো। কাইন্না আঙুল দেখিয়ে ওয়াসরুমে গেলো। আয়নায় তাকিয়ে সে চিৎকার দিয়ে উঠলো।  দৌড়াতে দৌড়াতে মাহবুব ঘেমে গেছে। দেখতে একদম কাইল্লা বিলাইয়ের মতো লাগতাছে।

কোথায় ভেবেছিলো তাকে সুন্দর লাগছে তাই এক সুন্দরী আরেক সুন্দরীকে ডেকে এনে তাকে দেখাচ্ছে। না! তাকে তো কুত্তার মতো লাগতাছে।

ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখলো কাজি বসে আছে আরো মুরুব্বীরা আছে। আসার পথেই মেয়েটা হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলো। এসে বসে আস্তে আস্তে কাগজ খুলতে লাগলো। কাজি বলছেন বলো বাবা "কবুল"।  কাগজে লেখা  "দুলাভাই পায়জামা উল্টা পরছেন কেন"? এটা পড়েই এক দৌড় দিলো ওয়াসরুমে। গিয়ে পায়জামা খুলে আবার পরলো। ফিতা বাধতে গিয়ে জোরে টান দিতেই ফিতা ছিড়ে চলে আসলো হাতে। বাধার অনেক চেষ্টা করলো পারলো না। শেষে লুঙির মতো গিড্ডু দিয়ে আসলো।

 স্টেজে আসা মাত্রই গিড্ডু খুলে গেলো। পায়জামাতে ধরে এক দৌড় দিলো ওয়াসরুমের দিকে যেন তার বড় কাজ রাস্তায় সেরে যাবে। 

সেরোয়ানির ওড়না আটকাতে একটা সেফটিপিন লাগিয়েছিলো। ওটা খুলে পায়জামায় লাগিয়ে পায়জামা আটকালো। পায়জামার সাথে লড়তে লড়তে ঘেমে গেছে সে। যে কেউ দেখলে ভাব্বে সে ডাইরিয়া রুগি সে। বাইরে বেরিয়ে আসতেই দেখে দরজার সামনে মানুষের ভির তানজুর মায়ের হাতে সেলাইনের পানি। সবার মুখে চিন্তা ফোটে উঠছে।তানজুর বাবা কেঁদে কেঁদে এসে জরিয়ে ধরে বললেন।

জামাই তোমার  পেটের এমন অবস্থা আগে জানলে আমরা বিয়ে ডেট দুইদিন পিচাইতাম।

মাহবুব কিছু বলার আগেই তাদের ঘরের কাজের ছেলেটা উঠে বলল।

ছোড ভাইজানের এই অবস্থা আগে ছিলোনা। বাড়িত থাইক্কা বাইর হইতেই এমন অবস্থা। রাস্তায়ও ভাইজানের হাগায় ধরছিলো তাই দৌড়াইতে দৌড়াইতে আইছে। আইয়া এই নিয়া তিনবার টয়লেটে গেছে। 

বলো কি? নাও বাজান এই সেলাইনের পানিটা খাও সেরে যাবে।

শাশুড়ী জোর করেই পানিটা খাইয়ে দিলেন। শাশুড়ীর ধাক্কাধাক্কিতে  সেফটিফিন খুলে গেলো। পিনের ঘা খেয়ে মাহবুব পেটে ধরে উফফফ বলে উঠলো। সাথে সাথে শাশুড়ী বলে উঠলো।

এই সর সর সবাই জামাই হাগবে।

ওয়াসরুমে কে ছিলো তাকে সবাই মিলে ডাকতে শুরু করলো।

এই কে ভেতরে তারাতাড়ি বের হও জামাইয়ের পেটে মুচড় দিছে।

মাহবুবের অবস্থা এখন এমন যে মাটি ফাঁক হবে আর সে ডুকে যাবে। সেফটিপিন একের পর এক ঘা দিয়ে যাচ্ছে। তবে মাহবুব আর উফফ বলে উঠছেনা। কিন্তু এবার সেফটিপিন একেবারেই খুলে গেলো। পায়জামা ডিলে হয়ে আসতেই মাহবুব দু হাতে কমড় চেপে ধড়লো। কাজি সাহেব বলে উঠলেন।

আরে বাসায় কি একটা বাথরুম।  বেচারার কখন থেকে পেটে মুচড় দিয়ে যাচ্ছে।

ভদ্রলোক একজন বের হতেই মাহবুব দৌড়ে ডুকলো। আর সেফটিপিন লাগাবেনা। আবারও গিড্ডু দিলো।

বিয়ে পরানো শেষে মুরুব্বিদের সালাম করার জন্য নিচু হতেই পায়জামার গিড্ডু খুলে গেলো। সালাম করে দাঁড়াতেই পায়জামা খুলে পরে গেলো। এক সাথে সবাই চিৎকার দিয়ে উঠলো। সবার চিৎকারে সে অজ্ঞান হয়ে গেলো। জ্ঞান ফেরার পরে নিজেকে বাসর ঘরে আবিস্কার করলো। তার বউয়ের হাতের সেলাইনের পানিটা এগিয়ে দিলো।

ওই বাসর ঘরে মানুষ জামাইরে গ্লাস ভরে দুধ এনে খাওয়ায়।আর তুমি সেলাইনের পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?

বাবু এসব কি বলতেছো তুমি? তোমার অবস্থা কেমন হইছে দেখো? চোখ মুখ শুকিয়ে কাট হয়ে গেছে। ডাইরিয়া নিয়ে গেলা কেনো বলো? বাথরুম করতে করতে একেবারে দুর্বল হয়ে গেছো। নাও সেলাইন খাও। 

জোর করেই সেলাইনের পানিটা খাওয়ানো হলো মাহবুবকে। 

বিয়ের দুইদিন পরে নিয়ম অনুযায়ী তানজুদের বাড়িতে গেলো মাহবুব। এবারও সে পায়জামা পরছে একটু টাইট কিন্তু সমস্যা নেই ফিতা মজবুত আছে। শাশুড়ী কে সালাম করার জন্য বসলো। তখন পাদের মতো একটা শব্দ করে তার পায়জামা ছিড়ে গেলো। উপরে তাকিয়ে দেখলো সবাই নাক ধরে আছে। আজব সে কি পাদ মারছে নাকি? লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে তার। শালিরা এসে টেনে রুমে নিয়ে গেলো। কতো রকমের নাস্তা দিলো সবাই। শাশুড়ী এসে বললো।

এই কি করছিস তোরা জামাইকে এগুলো খেতে দিবিনা জামাইয়ের পেটে গ্যাস জমে আছে।। 

লজ্জায় মাহবুবের ইচ্ছে করছে দৌড়ে পালিয়ে যেতে।

মাহবুব উঠোনে তার শালার সাথে কথা বলছে আর দুইটা পিচ্চি এসে বার বার মাহবুবের পাঞ্জাবি ধরে টানছে আর দৌড়াচ্ছে। একটা সামনের দিক ধরে টান দেয় তো একটা  পিছনের দিক ধরে টান দেয়। মাহবুব দুই হাত দিয়ে পাঞ্জাবীর দুই দিক ধরে রাখছে আর  মনে মনে দোয়া দুরুদ পরছে তার ছেড়া পায়জামাটা যেনো কারো চোখে না পরে। একটু পরে বাচ্চারা চলে গেলো। মাহবুব সস্থির একটা নিশ্বাস ফেলে পাঞ্জাবি ছেড়ে সুন্দর করে হাতে হাত বাজ করে দাড়ালো।

 পুরো উঠোন জুড়ে মানুষ ভরে উঠলো কারন ঘরে কারেন্ট নাই। বাইরের বাতাস খাবে সবাই। হঠাৎ একটা বাতাস আসলো এসেই মাহবুবের পাঞ্জাবির পিছনের দিক তুলে ফেললো উপরে। সাথে সাথে অনেকগুলা গলায় একই কথা শুনা গেলো। নতুন জামাইয়ের পায়জামা ছেঁড়া।

বাকি দুইমাসের কাহিনি মাহবুব জানেনা কারন সে দুইমাস কোমায় ছিলো।


.পায়জামা
.টিপু রহমান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad