প্রবাসীদের ঈদ কেমন কাটে কষ্টের গল্প

প্রবাস জীবন || প্রবাসীদের ঈদ

ঈদ আসে, ঈদ যায়, প্রবাসীদের ঈদ কেমন যায়?

ঈদের দিন ঘনাতে থাকে প্রবাসীদের দুশ্চিন্তাও বাড়তে থাকে।
ছোট ভাইটাকে কথা দিয়েছিলাম সামনের ঈদে তোকে একটা টাচ-স্ক্রীন মোবাইল কিনে দিবো।
ছোট বোনটার কত শখ নায়িকাদেত মত দামি মডেলিং জামা কিনবে।
ছেলেটা বলেছিলো, বাবা স্কুলে হেটে যেতে কষ্ট হয় এইবার ঈদে আমাকে একটা সাইকেল কিনে দিও।
আমার পরীর মত মেয়েটার শখ পরী জামা কিনবে।
অনেক আগেই বউটা একটা দামি শাড়ি চেয়েছিলো, এবার ঈদে কিনে দিতে না পারলে বউকে মুখ দেখাবো কিভাবে।
মা ফোন দিয়ে বলেছে, বাবা ঈদে কত মেহমান আসবে বাজার-সদাই করতে হবে ঈদের আগেই, টাকাটা একটু তারাতারি পাঠাইস।
বাবার ইচ্ছা, কয়েকজন মুরুব্বি আর মসজিদের ইমাম সাহেবকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবে। টাকা একটু বেশি পাঠাতে হবে।
সবার এত এত শখের ভীরে প্রবাসীদের নিজের কোন শখ থাকেনা।
অবলীলায় কখনো কোন শখ যদি মনা আকাশে উঁকি দেয় মুহূর্তেই সেই শখগুলোকে গলা টিপে মেরে ফেলে এক নিঃশ্বাসে।
সেই পুরনো পাঞ্জাবীটা পড়েই ঈদের নামাজটা সেরে ফেলে। পরিচিত সহকর্মী কারো সাথে দেখা হলে হাসি দিয়ে বলবে পাঞ্জাবীটা গত ঈদে কিনেছিলাম শুধু ঈদের পড়ে আর পড়া হয়নি নতুনই রয়ে গেছে। তাই আর টাকা অপচয় করে নতুন কিনলামনা।
সহকর্মী তার মনের অবস্থাটা বোঝতে পারে কারন তারও একই অবস্থা।
সেও হাসি দিয়ে বলবে, ঠিকই বলেছেন ভাই।
অনেকে হয়তো বাড়তি টাকার যোগান দিতে গিয়ে ঈদের দিনও ওভার টাইম ডিওটি করবে।
দেশ থেকে প্রিয়জনেরা ফোন দিলে মিথ্যাবাদী প্রবাসীটি রাজ্যের আনন্দ দেখিয়ে বলবে, বাসায় আজ পোলাও-মাংস, লাচ্ছা সেমাই রন্না করেছি। নতুন কাপড় পড়ে ঈদের নামাজ শেষে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বেড়িয়েছি।
সত্যটা হলো, কাজে কাজে অনেক বেলা হয়ে গেছে অথচ এখনো তার ঈদের সেমাই খাওয়া হয়নি।
শুধুমাত্র, কেবলমাত্র ভালোবাসার মানুষগুলোর একটু হাসি আর প্রিয়জনদের শখ পূরণই হচ্ছে প্রবাসীদের একমাত্র ঈদ আনন্দ।
প্রবাসে থাকা আমাদের প্রিয়জনদের কাছে নিজেরদের চাহিদা গুলো বালার আগে আসুন জিজ্ঞাস করি, ঈদের জন্য সে কিছু কিনেছে কিনা। ঈদের আনন্দ উদযাপনের জন্য তার প্রস্তুতি কেমন।
হয়তো আমাদের মায়ামাখা কিছু কথাই তাদের ঈদ আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
সকল প্রবাসী ভাই-বোনদের জানাই ঈদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
“ঈদ মোবারাক”
প্রবাসীদের জয় হোক।
আনন্দের হোক প্রবাসীদের ঈদ।।